সোমবার, ২৯ জুন, ২০১৫

নির্ঘুম কোনো ঘুমে !

যদি হাতের রগটি কেটে রক্তের বন্যা বয়ে দেই এবং অকাল কোনো ঘুমে চলে যাই এ মুহূর্তে কেও কি জানবে?
খোঁজ নিবে কেও?
পাশের রুমে থাকা আব্বু-আম্মুরো জানতেও তো সময় লাগবে, সেই সকাল গড়াবে।  তাইনা? ঠিক এ মুহূর্তে মরে গেলে?
হয়তো এ ভোর টাই হতো আমার শেষ দেখা কোনো ভেজা ভোর।

কিসের জীবন কাটাই আমরা? প্রতিটি রাত এক গভীর আবেগ নিয়ে একাকিত্তের কিছু হা-হুতাস। কেও কি প্রতিটিক্ষন আমার জন্য জেগে থাকে? চিন্তায় থাকে? এই যে রাত জাগা, আবেগে নীরব কিছু কান্না,কই কেও তো এর কোনো খবরও নেয় না। কি হবে? যদি মরে যাই?  মা-বাবা এই দুটি শব্দ ছাড়া মাঝে মাঝে বেঁচে থাকার মতো কিছু খুজে পাই না। ইশ যদি পারতাম, হাতের কোনার রগ টা কেটে দিয়ে নির্ঘুম কোনো ঘুমে চলে যেতে নিভৃতে-যতনে-গভীরে। খুব গভীর এক ঘুম... যা কোনোদিনই ভাঙার নয়!

বোকা মন ।

বড্ড  উথাল-পাতাল করতেছে মন ডা, কেন জানি অন্তর চক্ষু দিয়া আর কিছুই দেখিতে পারিতেছি না। বলো তো এমন হইলে কেমনে হবে? মন টারে যে আটকায়ে রাখতে হবে। ভাল্লাগেনা ব্যাধি তে পাইয়া বইলে  সায়জি আমি তো ধ্বংস হইয়ে যাবো ।

-কি চাচ্ছে তোর মন?

মন চাচ্ছি হারায়া যেতে, বহু দূরে । ঐ যে সমুদ্র ? সমুদ্রের দেশে যাইবাম চাই গো সায়জি , পাহাড়ের সাথে আত্মার হাহাকারের হলের ফলক করবাম মন চাচ্ছি । সমুদ্দর যবে স্রত নিয়া আইবে তার সাথে ভেসে যাইতে মন চাচ্ছি আর যখন ঐ দেশে মেঘডি বৃষ্টি নামাবে আমিও কানবাম গো সায়জি। অনেক কানবাম, চিল্লায়া কানবাম। এমনি লুকায়া লুকায়া কাঁদতি পারবোনা সেখানে । চিল্লা-পাল্লা করি কাঁদবো । যেরাম করি পাথরের উপর স্রত আঁচড়ি পড়িলে পাথরো ভিজে যায়,আমিও ভিজে যাইবো। আর ঐ যে সূর্য , সে যখন অস্ত যাবি, সেখানে নাকি রূপকথা নেমে আসি। কতোদিন ধরি রূপকথা শুনি না কও দেহি ?   ভাঙ্গা নায়ের ভাঙ্গা তরী লয়া আমি যাবগো সেখানে সাইজি, আমারে আর বাঁধা দিয়ো না । আমি বড় ক্লান্ত গো, ভাল্লাগেনা ব্যাধি ধরি আমি আর মিছা মানুষগো দুর্বিনীত চেহারার মাঝে থাকতে পাচ্ছি না । আমায় মুক্তি দাও.... অন্তর চক্ষু দিয়ে আমি ভালবাসতে চাই, কল্পনা কত্তে চাই, বিশ্বাস কত্তে চাই, সৃষ্টি কত্তে চাই, স্বপ্ন দেখতে চাই ।

অবুঝ মন!

অবুঝ এ মন
অবুঝ কথন
অবুঝ ক্ষনে
অবুঝ মতন
অবুঝ চাওয়ায়
অবুঝ স্বপন

নীলচে আলোয়
নীলচে তুমি
নীলাভের মাঝে
একলা আমি ।

একলা ক্ষনে ভীষণ আবেগে
অবুজ মনে যখন-তখন
চাইছি তোমায় অবুঝ মতন ।

স্ট্যাটাস সমগ্র-২

-আমি কি সত্যি তোমাকে খুব জালাতন করি?
-হুম
-তুমি কি চাও যে আমি আর তোমাকে না জালাতন করি?
-হুম,
-সত্যি?
-আমার চাওয়া না চাওয়াতে কিছু যায় আসে না। কারন তুমি জালাতন করলেও কি না করলেও কি।
-মানে?
-মানে, তুমি চাইলেও তুমি আমাকে জালাও,না চাইলেও জালাও।
-যেদিন বুঝবো সেদিন থেকে আর জালাবো না।
-লল!  তা কি করলে তুমি বুঝবে?
-কিছু করতে হবেনা তোমার,আমি বুঝে নিবো।
-হাহাহা, এ সাধে কি বলি তুমি একটা....
-কি?
-না, ঐ ডাক টা দিবো না। কারন, কিছু আদরে ডাক গুলো সারাজীবন জালায়। সারা জীবন।

বেদনা, তুমি বড় অদ্ভুত। তোমায় আমি আমার মতো করে এ জীবনভরে দেখে গেলাম।  নীল খামে চিঠি টা মন মাঝারেই রেখে দিলাম। কি দরকার সবটুকু বোঝার।যা শেষ তা তো শেষ,তাইনা? তবু কিছু শেষ কেন যেনো হয়েও হয়না শেষ।

মা দিবস ২০১৫

মা কে নিয়ে টুকটাক প্রায়ই লেখি। আজো লিখেছিলাম,বেশিরভাগ থাকে আম্মুর সাথে আমার কথোপকথন।
সবাই অনেক মজা পায় আমার আর আম্মুর কথাবার্তা শুনে। সত্তিকার অর্থেই ব্যাপারটা এমন।আমার সাথে আমার মা'র সম্পর্কটা খুব মজার।সবসময় আম্মুকে কোনো না কোনো ভাবে বিরক্ত করতেই হয় আমার।তারপরো আমি তার চোখের মনি।হবেই না বা কেন? আমি যে তার একমাত্র ছেলে। ঠিক এই ব্যাপারটা যে দিন বুঝতে পেরেছিলাম সেদিন থেকে চোখ বন্ধ করে পণ করেছিলাম নিজের বিবেক-বুদ্ধি থাকা অবস্থায় কোনো কিছু তে আম্মু কে কস্ট দিবো না।যা দেয়ার ঐ ছোট বেলায় না বুঝ অবস্থায় দিয়ে দিয়েছি এবং তার জন্য আল্লাহ আমাকে মাফ করুক। মা দিবস উপলক্ষে মা কে নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু লিখছেন আমিও লিখলাম।
কারো ভাষ্য মতে মা কে নিয়ে আলাদা দিবস এর কি দরকার? মা তো প্রতিক্ষণে ভালবাসার জন্য,তাইনা?
কারো মতে ফেসবুকে যতোটা মা কে নিয়ে লাফাও তা বাস্তবে কতো টা করো? একটু তাকে যেয়ে বলো "মা ভালবাসি তোমাকে অনেক বেশী"
আমি বলি "একটা দিন মা'র জন্য হতেই পারে না, অবশ্যই প্রতিটা দিন ক্ষন মায়ের জন্য ভালবাসা থাকে হৃদয়ে তবে কি একটা দিন একটু বিশেষ ভাবে তাকে দেয়া তে ক্ষতি টা কোথায়?"  
বিশেষ কিছু না, আমি প্রতি মা দিবসে আম্মুকে যায়া জরিয়ে ধরি এবং বলি আম্মু "I love you"
আম্মু আমাকে কপালে চুমু দিয়ে দেয়। বলুন এ ক্ষন কি সবসময় পাওয়া সম্ভব ?

আমরা সবাই আমাদের মাদের কে প্রতিটা ক্ষন ভালবাসবো এবং বাসি তবে তাদের জন্য বিশেষ দিন এবং ক্ষন গুলো খুব কম, চলুন এই বিশেষ দিন এবং ক্ষন গুলোতে অন্তত তাদের কে জানিয়ে দেই পৃথিবী টা একদিকে আর তাঁরা একদিকে। একটু বেশী Special feel করাই তাদের?

আমিঃ (জড়ায়া ধরে) আম্মু, I love you :D
আম্মু: আজকে কি mother's day?
আমিঃ আম্মু, এমনে বলো কেন? আমি কি এমনে তোমাকে ভালবাসি না ?
আম্মুঃ না, তা তো বাসই। তুমি তো আমার সোনার ছেলে,এক টুকরা মানিক।
আমিঃ থাক, লজ্জা লাগে, আর বইলো না :p
আম্মুঃ রাত জাইগো না, সকালে ক্লাস আছে।
আমিঃ আইচ্ছা :v :3
আম্মুঃ তবে এবার Cox's Bazar থেকে যে গিফট গুলা আনছো সেগুলা আমার পছন্দ হইছে অনেক।
আমিঃ ইয়ে না মানে ঠিক আছে ওগুলা সব তোমার।
আম্মুঃ তোর তো কেও নাই, তাহলে আর কারে দিবি? আমারি তো ?
আমিঃ হ, (Sigh),সব তোমার।
আম্মুঃ আমাকে আবার জড়ায়া ধরে কপালে চুমু দিয়ে 'মজা করলাম,ওগুলা পড়ার বয়স আছে নাকি বোকা?'
আমিঃ (থব্দ খায়া তাকিয়ে থাকলাম)
আম্মুঃ আমি চাই আমার বোকা ছেলেটার জন্য একটা মা আসুক, তারপরেই আমার শান্তি ।
আমিঃ হ রাইত হইছে,তুমি যাও। ঘুম পাইছে আমার :3 -_-

এইতো মা দিবস, খুব কি বিশেষ কিছু করলাম? তারপরো অনেক বিশেষ এই ক্ষন এবং মুহূর্ত গুলো বিশ্বাস করুন। :)
পৃথিবীর সকল মা'দের প্রতি ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা ।  <3 সব মা গুলো ভালো থাকুক, ভালবাসায় থাকুক এই কামনাটাই এখন মুখ্য ।

কথোপকথন-০১

-জানো খুব মন খারাপ লাগছে আমার,
-কেনো?
-জানিনা তো। শুধু জানি ভালো লাগছেনা।
-কি করতে ইচ্ছে করছে?
-হারিয়ে যেতে।
-হারিয়ে যেতে?
-কোথায়?কার থেকে হারিয়ে যাবে?
-কোথায় জানিনা, হয়তো অচেনা কোনো শহড়ে, এমন এক দেশে যেখানে মানুষ গুলো অপরিচিত,ভাষা অপরিচিত। তারা কি বলছে আমি বুঝবো না,আমি কি বলছি তাঁরা বুঝবে না। একটা মজা আছে এতে।
-তুমি আসলে পাগল হয়ে গেছো।
-না আমি সত্যি হারিয়ে যেতে চাই,আমার এ পরিচিত মুখ,আর মুখোশ গুলো ভালো লাগছেনা। নিয়ে যাবে আমায়?
-আমাকে নিয়ে হারাতে চাও? কই সে কথা টা তো আগে বলো নি ?
-আমি তো এটাও বলিনি যে আমি একা হারাতে চাই,কি বলেছি?
-না তা বলো নি কিন্তু মনে হচ্ছিলো তুমি বোধয় সব ছেড়ে ছুরে নির্বাসনে যেতে চাচ্ছো ।
-নির্বাসন বলছো কেনো?আমি শুধু এক অচেনা দেশে,অচেনা শহরে তোমার সাথে হারিয়ে যেতে চাই। খুব কি অসম্ভব তা?
-না,তা না। কই যাবে?
-তুমি যেখানে নিয়ে যাবে সেখানেই যাবো। শুধু আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছো তা বলো না।
-সে কি?আমরা কি পালাচ্ছি ?
-হুম, পালাচ্ছিই তো।
-কি থেকে,কার থেকে, কোথা থেকে ?
-বড্ড প্রশ্ন করো তুমি। পালাবে কিনা বলো ?
-এভাবে? কোনো কিছু চিন্তা না করেই ?
-আমি না তোমার সাথে থাকলে তুমি আর কিছুই চিন্তা করো না ?
-বুঝলাম।
-কি বুঝলে শুনি?
-ব্যাগ কি গুছিয়েছো নাকি সেটা এখনো বাকি আছে?
- ইয়ে :D
-পাহাড় না সমুদ্র?
-দুটোই
-আকাশ না মেঘলা আকাশ ?
-মেঘলা আকাশ ।
-শহড় না গ্রাম ?
-কুড়ে ঘর!
-একটা শর্ত?
-সেটা কি ?
-না এখন না,পড়ে বলবো ।


দুজন সত্যি হারিয়ে গেলো, পাহাড়ের দেশে,সমুদ্রের পারে এক কুড়ে ঘরের নীড়ে বাসাও বাঁধল। সেখানে ভোর বেলা পাখিরা এসে তাদের ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়ে যায় আর বিকেলে সন্ধ্যে নামানো লালচে সূর্য টা তাদের অজানা গল্প শুনিয়ে যায়।মেঘলা আকাশ কোনো নোটিস ছাড়াই তাদের ভিজিয়ে দিয়ে যায়। পাহাড়ের ঝরনা ধাঁরায় তাদের যতো দুস্টমি আর রাতের চাঁদ মামা তাদের ঘুম পারানো গান শুনিয়ে কোন সে তারার দেশে যে নিয়ে যায় তা আর বলে বোঝানো সম্ভব না।মেয়েটি যখন ছেলেটির কোলে মাথা দিয়ে ঘুম দেয় কোথা থেকে যেনো এক অচেনা তবু খুব চেনা সুর ভেসে আসে, দেখতে দেখতে ভোর হয়ে যায়। ঘুম ভেঙ্গে বালিকা দেখে বালক তার উপরেই শুয়ে আছে,বালকের বাহুডরে বালিকার হাত আবার বালিকার হাতের মুঠোয় বালকের হাত। বালিকা চুপ করে হাত সরিয়ে আস্তে করে সরে আসে মনে হয় একটু এদিক সেদিক হলেই মধুর ঘুম টি ভেঙ্গে যাবে বালকের যে ঘুম পৃথিবীর সব কিছু থেকেও দামি এ মুহূর্তে।

-তারপর ?
-তারপর তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়, তারা ফিরে আসে একদিন ।
-ফিরতে তো হলোই
-ফিরতে তো হয়ই,তাইনা?কিন্তু হারিয়ে যাওয়া মুহূর্ত গুলো তো থেকে গেলো ?
-আচ্ছা শর্ত টা কি ছিলো ?
-না, তুমি তো শর্ত ভাঙ্গো নি তাই তা বলার প্রয়োজনই হয়নি।
-কি ছিলো বলো না?
-ভেবে দেখো । আমি যাই তোমার জন্য কফি বানিয়ে আনি।
-আহা,তুমি যাবে কেনো? আমিই যাই।
-থাক,আজ আমিই বানিয়ে আনি,তুমি না হয় শর্ত নিয়ে একটু চিন্তা করো ।

বালিকা চিন্তা করতে থাকলো,বালক তার জন্য কফি বানাতে গেলো ! তাঁরা চেনা পরিচিত শহরেই,পরিচিত ভাষা তেই রয়ে গেলো তবু তাদের নিজেদের ভুবন টা কেনো যেনো সবার থেকে অচেনা,আলাদা,অন্যরকম হয়ে রইলো 

মেঘকন্যা

মেঘ ঘুর ঘুর ডাকছে
বৃষ্টি কোথায় সাজছে?
মেঘলা মেয়ে,মেঘলা বরণ
কেশে তাহার মন হরণ
বৃষ্টি কাহন জবা কানন
বৃষ্টি আজ আসবে
তাই তো বাতাস বইছে
কল্প যে সে আঁকছে
না বলা কেচ্ছা দেখো কতো বলছে
বৃষ্টি বরণ? জবা কানন?
মেঘ বিলাসী? মন উদাসী?
বৃষ্টি কন্যা?
না না, মেঘপরী
ঐ যে দেখো বৃষ্টি নামছে!
উদাসী চোখে ঘোলাটে মনে
নয়ন তারায় বৃষ্টি কন্যা কি যেনো ভাবছে
হ্যাঁ হ্যাঁ, বৃষ্টি দেখো আসছে
বৃষ্টি বেলায় কন্যা আনমনা
তবু সে তো বৃষ্টি পানে চাইছে ।
বৃষ্টি দেখো আসছে,
মেঘপরীর দেশে,সে নয়নে মেঘলা বেশে
সে যে নামবে ।
মেঘলা কন্যা, মেঘলা বেশে
বৃষ্টি বিলাশে আজ সাজবে
তাহারে আজি সে যে বাঁধবে ।

মেঘকন্যা
-অবয়ব সিদ্দিকী

সাগরের পারে, পাহাড়ের দেশে (১৬ই মে ২০১৫ )

আমার কক্সবাজার ভ্রমন  নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই, পোস্ট টা হয়তো অনেক বড় হবে তাই আগেই বলে রাখছি যাদের পড়ার ইচ্ছা পড়বেন না হয় পড়বেন না । :)

অনেকদিন যাবত ধরে আমি কোথাও যাই না, খুব বেশী একঘেয়ামি টাইপ হয়ে গিয়েছিলাম।লাস্ট ২০১২ সালে কক্সবাজার গিয়েছিলাম তার আগে সিলেট এর পড় থেকে ইউনি লাইফ নিয়ে বিজি হয়ে যাই আর কোথাও যেতে পারিনি। ইউনি তে ওঠার পড় বুঝতে পারি এখানে আমার নতুন করে পথ চলতে হবে। পুড়নো সেই বন্ধু-বান্ধব,সঙ্গি-সাথি কেওই নেই। যাইহোক, ব্যাপারটা এতো সহজ না,নিজেকে ইউনি এর সাথে মেলাতে মেলাতেই ৫-৬ সেমিস্টার চলে যায়।এর ভেতর বেশ কিছু সহপাঠি আমার বেশ কাছের হয়ে পড়ে যেমন: নীরব, হাকিম, বিদ্যা সহ আরো অনেকে। একজন বেস্ট ফ্রেন্ড পেয়ে যাই, আসলে ভাই ইম্রান।ইম্রান এর সাথে আমার প্রথম বন্ধুত্তের কারন ছিলো আমি ইম্রির মাঝে নতুন কিছু পেয়ে ছিলাম, একটু ঘাওরামি টাইপ বলা যায় ;) :3 (চেতিস না রে,আদর কইরা বললাম)
যাইহোক ঐ কথায় না গেলাম,আমি আর ইম্রি মিলে ঠিক করেছিলাম ২য় সেমিস্টারে আমরা ইউনি বন্ধুরা মিলে একটা Tour দিবো । সেটা কক্স হতে পারে,সিলেট হতে পারে বা কুয়াকাটা হতে পারে। কিন্তু সে আর হলো? দেখতে দেখতে আমরা ৯ম সেমিস্টার পর্যন্ত চলে আসি কিন্তু সে ভ্রমন আর হয় না।শেষমেষ ইম্রান আশা ছেড়ে দিলো এবং বলে উঠলো 'আমি একাই যামু'
চিন্তা করলাম নাহ, এখন একটা হেনস্তা-ফেনস্থা করতে হয়। ওদিকে হাকিম কয়েকদিন পড় পড় বলে উঠে 'কি রে বন্ধু আমরা কি কোথাও যাবো না, ইউনি লাইফ তো শেষের দিকে চলে আসলো।'
মহা বিপদ তো, আসলেই তো শেষের দিকে চলে আসলাম, অতঃপর আমি আর ইম্রি মিলে একটু সিরিয়াসলি বসলাম, ডাকা হলো নীরব ভাইকে। সে বলে উঠলো 'এতো কিছু জানিনা, যাইতে ইচ্ছা করতেছে তো যাইবাম,কে কে যাইবা হাত তুলো। মিডি তুই  ব্যাবস্থা কর,আমরা যাইতেছি' অনেক ঠেলা শেষে আমরা ৬ জন হলাম, Hossain Imran​, Nirob Ahmed​, Rathul Islam​, Bidda Charan​, Sms Bond​ (সানি আমাদের ইউনির না) এবং আমি !

চলে গেলাম কক্সবাজার, ঘুরে এলাম। ভবঘুরে হয়ে আমরা ৬ জন মানুষ, ৬ দিনের মতো থেকে এলাম।কাছ থেকে সবাই সবাইকে দেখলাম,বুঝলাম বন্ধুত্ত সহপাঠি থেকে ভাইয়ে চলে গেলো সম্পর্ক গুলো। কি, বোঝা গেলো কিছু? Bonding এমনি এমনি হয় না তার জন্য প্রয়োজন হয় effort. কিছু অনুভুতি এর আদান প্রদান আর বোঝাপড়া  তারপর একজনের উপর আরকেজন এর care। এগুলো থেকেই বন্ধুত্ত শুরু হয় এবং তা গাড় হতে থাকে।

শুরু টা ছিলো নীরবের বাসা থেকে,নীরব সবাইকে সেদিন মুরগি আর ভাত রান্না করে খাওয়াইছে :D তারপর সেখান থেকে কমলাপুর প্লাটফর্ম ৩ এ ট্রেন এর জন্য রাত ৩ টা অবধি অপেক্ষা। আমাদের চিল্লাপাল্লা,হেড়ে গলায় গান গাওয়া!এক আপুর সাথে সবাই মিলে indivisually FLIRT করা :p
তারপর ট্রেন আসা এবং কি চিৎকার আমাদের! ট্রেন এর মামা আমাকে বলতেছিলো তাড়াতাড়ি উঠেন, রাইখা চলে যাবো কিন্তু ;) হাহাহাহা...ট্রেন এর ভেতর কি ফীল একেকজনের, বিদ্যা আর সানি এর সে জগত বিক্ষাত ঘুম। পৌঁছে গেলাম চট্টগ্রাম এবং সেলফি হাকিমের আইফোনে ইস্টিশন সেলফি তোলা,আহা !
চট্টগ্রাম থেকে কক্স এর বাস ধরার সময় নীরব ভাই আর ইম্রান ভাই এর সেই পার্ট এর কথা ভোলা অসম্ভব!
'মামা ৬ জন আছি, ১০০০ টাকা দিমু যাইবা?নাহলে ফুটো এখানে আয়া চিল্লাইয়ো না,আমাগো যেডা তে খুশি আমরা যামু' লল !!

তারপর? কক্সবাজার :D স্পস্ট মনে আছে কলাতলি তে যখন গাড়ি থেকে আমরা প্রথম সমুদ্র দেখি! ইস কি শান্তি টাই না লাগতেছিলো! টানা ১৯ ঘন্টার Journey এর পড় Finally আমরা কক্সবাজার সমুদ্রের শহড়ে।
তারপর হোটেল রুম নিয়ে আমাদের সেই মুহূর্ত এবং অভিনয়, হোটেল এর রুম চরম পছন্দ হবার পরেও আমার আর নীরব এর কি ভাব :p ইম্রান তো পারলে না, এইখানে আমরা থাকবো না, লল! অথচ রূমে ঢুকে প্রথম চিল্লানি ইম্রি দিয়েছিলো ।  রাতে বিচ পারে যেয়ে আমাদের লাফঝাপ! সবাই যেনো একসাথে বাচ্চা হয়ে গেলাম। শুরু হলো আমাদের একেকজনের ভেতরকার বাচ্চা টা বের হয়ে আসা । মুহূর্ত গুলো সত্যি ভোলার নয়।

তারপর শুরু হলো আমাদের ভ্রমন, একেক করে হিমছড়ি,ইনানী । জীপে কি লাপঝাপ চিল্লানি আর গান সাথে সেলফি হাকিমের সেলফি তো আছেই, আবার বিদ্যা'র মোবাইলে কথা কওয়ার প্যাঁড়া!একটা আরেকটারে গাইলানো মন মতো , কি যে অবস্থা।হিমছড়ি তে ঝরনা দেখিয়া সবার মুখবয়ব ছিলো 'ইহা কি ঝর্না!?এর চেয়ে আমি মু*** বেশী পানি বের হবে' :p :p হাহাহাহা ! তারপর পাহাড়ের উপরে সে চাচার টক আম ভর্তা! আহা !
ইনানি তে যেয়ে  আমার আর নীরবের সেই মোটর রাইড, তারপর ৬ জন মিলে রেস দেয়া।তারপর মোটার গাড়ি থামিয়ে ইম্রির লাল কাঁকড়ার অভিযান ছবি তোলার জন্য। কি যে সিনপাট! সানি'র একটা ছবি তোলার জন্য আমার ১ ঘন্টার পরিশ্রম! মনে থাকবে।  ফেরার পথে আমাদের হেরে গলায় গান,সন্ধ্যে নেমে আসা এবং হোটেলে ফিরে জ্যোৎস্না রাতে সমুদ্র দেখার জন্য বের হওয়া।
জ্যোৎস্নায় সমুদ্র দেখার মুহূর্তে আমার পাশে ছিলো নীরব। লল ! একটা কথা না বললেই নয়ঃ

নীরবঃ আহ শান্তি, জ্যোৎস্নায় সমুদ্র দেখার কি শান্তি। আর কেও প্যাড়াও দিতেছে না।কি মজা তাইনা দোস্ত?
আমিঃ দেখ, আগে এক মিনিট দেখ । প্যাঁড়া খাস নাকি দেখ।

তারপর আর না বলি :3 :p সে এক ইতিহাস ;)

পরদিন রামু তে যাওয়া, বৌদ্ধ মন্দিরে যেয়ে পায়ের নীচে ঠুস্কা ফালানো,
এরপর সে দূর পাহারে কোন এক স্বর্ণের মন্দিরের মতো দেখে সেখানেই যাওয়া।Discover করে একটা adventurious পাহাড়ের উপর উঠে যাওয়া। সবচেয়ে বেশী মজা আমরা এদিন টা তেই করেছিলাম। সানি'র সাথে আমার সেই পাহাড়ের নীচে সব কথাবার্তা।একলগে দুই বন্ধুর আবেগি হয়ে যাওয়া ভোলার না।তারপর পাহাড় জয় করে আমাদের জগত বিক্ষাত সেলফি তোলা :D ফিরে আসার সময়ে টেম্পু তে "টিকাটুলির মোড়ে" গানের সাথে সে কি নাচ আর চিল্লানী সব গুলার রে বাবা! #PRICELESS

মহেশখালী পুরোটাই আমার জন্য একটা Thrilling Journey, মোহনার উপর দিয়ে Speed Board দিয়ে যাওয়া আমার মতো সাঁতার না জানা মানুষের জন্য আসলেই ভয়ংকর।মহেশখালী তে সব চেয়ে মজা পেয়েছিলাম শিব মন্দিরে। সাওতাল মেয়েগুলা একটু বেশী সুন্দর ;) আমি ভাবতেছিলাম ঐখানে বিয়ে করে সংসার বাঁধলে কতো সুখে থাকা যায়,তাইনা? কি দরকার ঢাকার মতো আওলা-ঝাওলা শহড়ে এতো কস্ট করে থাকার? ইম্রি তো জিজ্ঞেসী করে বসলো একজন কে 'আপু, আপনারা কোন গোত্রের' (বেশী ভদ্র পোলা,সবাইরে কথা শুরু করার আগেই আপু ডাইকা বসে -_- :3 ) তারপর ফেরার পালা, ফেরার পথে যেখানে ভরপুর পানি ছিলো সেখানে দেখি শুকিয়ে গেছে,আমি বুঝিই নাই এখান দিয়েই আমি গিয়েছি পড়ে যখন বলা হলো জোয়ার এর সময় আসছি  আর ভাটার সময় ফিরছি তখন বুঝলাম। তবে Speed Board এ ফেরার সময়ে সব গুলা যে ভয় পাইছিলো। একেবারে :p

কক্সে ফিরে এসে শুরু হলো ঢাকা  ফেরার চিন্তা,নীরব আর আমি আসবো না যোগ দিলো ইম্রান আর সানি তারপর বিদ্যা আর হাকিম চট্টগ্রাম চলে যাবে বলে জানালো। কিন্তু আমরা কক্স এ আরো একদিন থাকবো কারন আমাদের সমুদ্র দেখা মন মতো হয়নি।কক্স এ একদিনে যা দেখলাম পোলাপাইন সমুদ্র আর কি দেখে মার্কেট করেই কুল পায়না। এক আমি অভাগা যে একাই সমুদ্র পারে শুযে শুয়ে সমুদ্র দেখলাম। মার্কেট এর প্রশংগ আর না টানলাম তবে মার্কেট নিয়ে আমি ইম্রান ভাইকে নতুন করে চিনতে পারছি :3 (মাইয়ারাও এতো শপিং করে নারে আর এতো প্যাঁড়া নেয় না রে! নীরব ভাইয়ে তুমিও কম যাও না :/ )
মার্কেট  এর একটা ঘটনা বলি, বিদ্যা শঙ্খ কিনবে তা আমাকে বললো 'চল দোস্ত আমাকে হেল্প করবি।' গেলাম তার সাথে,শঙ্খের দোকানে তিন-চার টা মেয়ে দাড়িয়ে শঙ্খ দেখছে দোকানদার শঙ্খ এ ফু দিয়ে বাজিয়ে দেখাচ্ছে।মেয়েগুলো আবার সে শঙ্খ নিজেরা বাজাতে যেয়ে পারছে না কিন্তু মুখ দিয়ে আওয়াজ করছে।আমাদের বিদ্যা ভাই যায়া নায়কের মতো শঙ্খ টা নিলো এবং বাজাতে যেয়ে খালি ফু দিয়ে পু পু করলো আর আশেপাশে থেকে সব হাসা-হাসি শুরু করলো। মানে ইজ্জত এর ফালুদা কারে বলে ! -_-
এরপর গালি একটাও মাটিতে পড়লো না... বিদ্যা রে !!
 

ফিরে আসার বেলা ঘনিয়ে আসলো, ফেরার পথে হানিফ বাসে ফিরে আসা। ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছিলো না পিসি তে বসে কোনো রেসিং গেম খেলছিলো তা নিয়ে এখনো আমাদের সংশয় আছে।সবগুলা ঘুম বাদ দিয়ে দুই চোখ বড় বড় করে সামনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
যাইহোক, ফেরার পথে সত্যি খুব খারাপ লাগছিলো যখন কক্স ছাড়ছিলাম। নীরব তো বলেই উঠলো 'আমি যাইতাম না প্লিজ,কেন জানি মনে হচ্ছে কিছু একটা রেখে যাচ্ছি'

হ্যাঁ, রেখে তো এসেছি। আমাদের সুন্দর কাটানো কিছু মুহূর্ত ,আমাদের এক বন্ধুর সাথে আরেক বন্ধুর বন্ধুত্ত গাড় হবার ক্ষন কিন্তু সাথে নিয়ে এসেছি স্মৃতি। আমরা একসাথে এভাবে আবার কবে হতে পারবো জানিনা কিন্তু সেখানে কাটানো সময় গুলো সত্যি কখনো ভুলবো না। কে কিভাবে মনে রাখবে কি রাখবেনা জানিনা কিন্তু আমার অনুভুতি গুলো আমি বলে শেষ করলাম। দুঃখিত অনেক বড় পোস্ট দেয়ার জন্য কিন্তু অল্প কথায় কিছু অনুভুতি আসলে শেষ করা যায় না, হয় না।
আমাদের এই Tour এ অনেক ভুল ছিলো, প্যাঁড়া ছিলো, ঝামেলা ছিলো এমন কি মন মালিন্য ছিলো আবার অনেক তিক্ততা ছিলো বা আছে । আমার উপরেও অনেকের ক্ষোব বা রাগ আছে বা ছিলো বা থাকবে, আমারো আছে বা ছিলো কিন্তু সর্বোপরি আমি বলবো কোন কিছুর ভালো ও মন্দ দুটো দিক থাকাটা জরুরী না হলে তা জমে না। আমাদের Trip জমেছে কারন এখনো আমাদের একজনের আরেকজন এর উপর Expectetion আছে। চাওয়া-পাওয়া আছে,একটা Bonding সবার মাঝে তৈরি হয়ে গেছে চাইলে সেটাকে তোমরা সামনে নিয়ে যেতে পারো কিংবা ভেঙ্গে ফেলতে পারো তবে আমার উপর রাগ রেখো না কেও, হয়তো অনেক রাগারাগি বা গালাগালি করেছি কারন হয়তো আমি একটু বেশী আবেগি মানুষ তবে আবেগটাও জরুরী।

কক্স এর সমুদ্র সমান ভালবাসা সবার জন্য এবং মুহূর্ত গুলো আমাকে দেয়ার জন্য হৃদয় থেকে বলছি ভালবাসি।

আমি এখানেই ইতি টানছি, কক্স নিয়ে আমার পোস্ট নিয়ে তোমরা যারা ক্লান্ত তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী, আবার আসবো হয়তো  তবে এই ট্যুর নিয়ে এখানেই শেষ করছি। আর সানি তুই আমাদের ইউনি মেট না, এতোদিন ছিলি ইম্রির বন্ধু কিন্তু দেখ এই ট্যুর তোকে আমাদের বন্ধু বানিয়ে দিলো আমদের তোর বন্ধু বানিয়ে দিলো এবং ইউনি তে না থেকেও তুই এখন আমাদের অংশ :)

এটাই হয়, এমনটাই হতে হয়, এবং এমনটাই হবে এই ছয় জনের ক্ষেত্রে, আস্তালা-ভিস্তা !

-অবয়ব সিদ্দিকী মিডি
সাগরের পারে, পাহাড়ের দেশে (১৬ই মে ২০১৫ )

An open letter to "Shopnopori"

Imagine one night in a bar or in any else  place we saw each other.I don't know you and you don't know me and we met with each others.Awkwardly we introduced ourselves.We became a good friend!We hang out all the night still we didn't know our names?How does it feels like?
We met again, we didn't make any sort of relationship except we started to hang out together, talk with together and sharing our thoughts together still we didn't give any name to our relationship?
What if we make romance but not into in a relationship? 
What if we both went out into a dream world? 
A world I created for you?In there you wouldn't feel any stress even you wouldn't feel sad for a bit,I guarantee you.Every day would be felt like "yes I want to live more with this person, yes I really do!"

A palace only  created from our both minds but feel like heaven where we live by heart and lead by love.Where you and me drunk together and also become high together.How does it feels? If the morning bird come to you first and tell you look at the sky that sun is trying to say something to you,listen to the whisper they whispering your name and feel the ocean,it's reminds you LIFE IS REALLY BEAUTIFUL. 

How 'll it feel
What will happen if we really fall for each other after our romance but before get into a relationship? And then come into give a name to our relationship?
What if we both fall at a same time and asking for married?Because we really want to live with each other, together for a lifetime and afterlife what it say ever after? 
Our married life and one day you got a call and talked anonymously with a person you knowed in your heart started to flirt with you again? 
How it'll feel when I ask you for a dinner date again after our marriage life to feel you our old love again?
Yes, it's me, Totally me!Not only finished here..but also I'm more and more than this! 
All I want is please come into my  life and never left! 

I'll always love to fall you in love with me in my lifetime and also love to fall in love with you till the end of my life.Yes, I'll always love to love you all the time!

- Aboyob Siddiquie Medi
(An open letter to "Shopnopori")


"মন্তুর রোযা"

ওর নাম মন্তু, মুন্তাসির উদ্দিন কিন্তু সবাই মন্তু বলে ডাকে।
মন্তুর বাবা নেই,মন্তুর বয়স যখন চার তখন তার বাপ কি এক রোগে মারা গিয়েছে। মা আছে তবে আরেক বাপের সাথে চলে গিয়েছে।মন্তু কে মাঝে মাঝে এসে দেখে যায় কিন্তু মন্তু কে কখনো নিয়ে যায় না । মন্তু শহরের চার কোনো ঐ সিগনাল টার পাশে যে বাস গাড়ি গুলো রাতে জমা হয় তার পাশেই এক অস্থায়ী ঘরে থাকে। ঘরটি কয়েকটি কাঠি আর সিমেন্টের ব্যাগ দিয়ে বানানো।
সারাদিন মন্তুর অনেক কাজ,সকাল বেলা বের হয়ে চায়ের দোকানে যেয়ে রহিম বস এর কাছ থেকে চা নিয়ে পাশের হোটেল এবং অফিস পাড়া তে চা দিয়ে আসে তারপর সকালের ডিউটি শেষ হলে রাস্তায় ফুল নিয়ে নেমে যায়।বিকেল পর্যন্ত ফুল বিক্রি করে সে নেমে যায় রাস্তার ফেলে দেয়া বোতল এবং কাগজ গুলো কুড়ে কুড়ে তা বিক্রি করার জন্য কারন সেগুলো থেকে আসা টাকা দিয়ে রাতে তার খেতে হবে।সকালে চায়ের দোকানের রহিম বসের চায়ের ডিউটি থেকে একটা বন রুটি আর চা মেলে আর দুপুরে ফুল বিক্রি করে যা হয় তা দিয়ে কোন মতে দুপুরটাও সে চালিয়ে নেয় তবে মাঝে মাঝে ফুল বিক্রি হয় না তাই দুপুর টাও না খেয়ে পার করতে হয়। মাত্র ৬ বছর বয়স মন্তুর!

গত কাল, ফজল কাকার কাছ থেকে সে শুনেছে আজ থেকে নাকি রোযা শুরু। সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে এবং সন্ধের সময় ইফতার করতে হবে তারপর নাকি রাতের খাওয়া টা ঠিক থাকবে আবার শেষ রাতে যখন ভোরের আযান দেয় তখন খেতে হবে। এভাবে একমাস চলবে। এ সময় টায় নাকি মানুষজন অনেক দান-খয়রাত করে তাই খাওয়া-দাওয়া নিয়ে খুব একটা ঝামেলা হবে না।মন্তু ফজল কাকা কে জিজ্ঞেস করলো 'সত্তি?এই মাসে যার কাছে যাইবো সেই খাওন দিবো?' ফজল কাকা একটু চিন্তা করে বললো 'অন্তত ইফতারের সময় তো দিবোই,আর রেযেকের মালিক আল্লাহ।রোযা রাখবি আল্লাহ দয়া করবো'
মন্তু খুব খুশি হয়ে গেলো,ফজল কাকার কাছ থেকে রোযার সব নিয়ম শুনে নিলো।

আজ রোযা,মন্তু আগ রাতে কিছু না খেয়ে খাবার টা শেষ রাতে খেলো।লেক পারের যেই চাচিটা ইটের মধ্যে বইতে দিয়া খাইতে দেয় সে আজকে কাওয়া বিরানি রাঁধছে। মন্তু কে দেখে চাচি আগের দামেই বিরানি দিলো তাই মন্তু খুব খুশি এবং মন্তু ভাবতে লাগলো রোযা টা সারা বছর থাকলে বোধয় প্রতি রাতে কাওয়া বিরানি খাইতে পারতো ।
সকাল থেকে মন্তু না খাওয়া,সে রোযা রেখেছে।নিয়মিত কাজের সাথে সাথে আজ মন্তু মসজিদে যেয়েও নামাজ পড়ছে।মসজিদে যখন ঢুকছে সবাই ওর দিকে কিভাবে জানি তাকাচ্ছে।তাই যেই কাকায় মসজিদে আজান দেয় সেই কাকা মন্তুরে ১০০ টাকা দিয়া বলছে পরের দিন থেকে যেনো অন্তত একটা পরিষ্কার কাপর পইড়া মসজিদে আসে। সে আনন্দে চোক্ষে দেখতেছে না। সেই টাকা নিয়ে সে চায়ের দোকানের রহিম বস রে বলছে তারে একটা কাপর কিনা দিতে। রহিম বস বলছে কিনা দিবে। সে আরেকবার চিন্তা করলো রোযা টা সারা বছর কেন থাকেনা?

সারাদিন পার হয়ে গেছে, মন্তুর কামাই হইছে মোট ৩০ টাকা। রহিম বস ২০ টাকা আর ফুল বিক্রির ১০ টাকা। কেও বোধয় রোযার মাসে ফুল কেনে না,এমনটাই মনে হলো মন্তুর।৩০ টাকা দিয়ে কি ইফতার করা যাইবো? মন্তু ভাবছে,রাইতের খাওন তো দুই বার। নাহ, সে একবার ঐ শেষ রাইতেই খাইবো । সে মনস্থ করে ফেললো আর ফজল কাকা তো বলছেই ইফতারের সময় এমনেই খাওন পাওয়া যায়। সে আজ অনেক অনেক খাওন দেখছে সকল হোটেল আর বড় বড় দোকানের সামনে সজায়া রাখছে। সে কল্পনা করতে লাগলো,সে পেট ভরে খাচ্ছে... এভাবে কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলো মন্তু বুঝতে পারে নাই। খুব বেশী ক্ষিদে তে তার পেট ব্যাথা করছে।

ইফতারের সময় হয়ে গেছে, দোকান গুলোতে এতো ভীর যে মন্তু দিশা পাচ্ছিলো না কি করবে,যে দোকানেই যাচ্ছে তাকে ধোমক দিয়ে  তারিয়ে দেয়া হচ্ছে, কিছু দোকানের সামনে দিয়ে তো তাকে হাটতেই দিতেছে না আবার কিছু দোকানের সামনে কেন,দূর থেকেই লাঠি দিয়ে যেভাবে কুকুর তাড়ানো হয় সেভাবে তাকে লাঠি দেখিয়ে হুংকার দেয়া হচ্ছে।

আযান দিয়ে দিলো, ইফতারের সময় হয়ে গেছে। মন্তু রাস্তার মোড়ের খোলা যে দোকান ডা ভীর কম ঐটার কাছে যেয়ে ড্রাম থেকে পানি নিয়ে,পানি খেয়ে রোযা ভাংলো। ৩০ তাকা দিয়া দোকান থেকে ইফতার কিনে সে ইফতার খেতে খেতে হাটা দিলো।একটা বেগুলি,বড়া সাথে মুড়ি মাখাইন্না আর জিলাপি,খাইতে ভালই মজা, রাস্তার পাশে একটা বড় দোকানের সামনে এসে সে দাড়িয়ে গেলোঃ

"খোলা একটা যায়গায় অনেক গুলা টেবিলে অনেক অনেক ভালো খাবার রাখা এবং সেখানে মানুষ গুলো বসে খাওয়া-দাওয়া করছে।কতো খাবার,কতো কিছু! এক টেবিলে মন্তুর চোখ আটকে গেলো, একটা বাচ্চা ছেলে বয়সে মন্তুর সমান হইবো। কিছুই খাইতে চাইতেছে না তার আম্মায় তারে জোড় করে খাওয়াইতে চাইতেছে।শেষ পর্যন্ত খাওন ডা টেবিলের পাশে ঢেল দিয়ে ফালায়া দিলো তারা। মন্তু যেয়ে খাবার টা উঠিয়ে নিলো দেখলো সকালে যে ও বন রুটি খায় ঐটার মতো দেখতে কিন্তু ভিতরে মাংশ দেয়া! আরে বাবা !! গরুর মাংশ মনে হয়!! সে আর কোনো দিকে না তাকিয়ে খেতে লাগলো। একটু পড় সে তার পাশে তাকিয়ে দেখলো তার মতো অনেক গুলা মন্তু একই কাজ করছে। ওরা একজন আরেকজন এর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো এবং জগৎ জয় করা এক হাসি দিয়ে ইফতার করতে লাগলো ।"

মন্তু ভাবতে লাগলো "ফজল কাকা হাঁচাই কইছিলো ,খাওন পাওয়া যায় রোযার মাসে অন্তত ইফতারের সময় তো পাওয়াই যায়,আর রেযেকের মালিক আল্লাহ। রোযা রাখলে আল্লাহ দয়া করবো' সে মনস্থ করলো সে এক মাস রোযা রাখবেই রাখবে যতই কস্ট হোক আর আল্লাহ'র কাছে দোয়া করতে লাগলো রোযা টা যেনো সারা বছর থাকে।

*১০% ভ্যাট প্রযোজ্য

বাবার অনেক টাকা থাকলে খুব তাড়াতাড়ি হয়তো দেশ টাকে ছেড়ে অন্য দেশে পারি জমাতাম।
জী, বাংলাদেশ ছাড়তে চাই।
কিন্তু আমাদের মতো Middle Class Family এর ছেলেপেলেদের যে এটাই বড় বাধা!টাকা-পয়সা,
বাবার হাতে যে শুধু আমাকে মানুষ করে ছেড়ে দেয়ার মতই অর্থ টা আছে।বাকি টা আমাকে বুঝে নিতে হবে। হবেই বা না কেনো? আর কতো? কম তো হলো না, সেই ছোট বেলা থেকে দেখছি,দিয়েই যাচ্ছে তো দিয়েই যাচ্ছে। একজন সৎ কামাই করা মানুষ বাংলাদেশে নিজের ছেলেকে রাজধানী তে রেখে যে মানুষ করতে পারছে সেটাই তো অনেক,আমি তো সেটা নিয়েই সঙ্কায় আছি!আমার তো সে অবস্থাও হবে না।
বাবা তো বলেই দিলো 'আর ১ বছর, তোমার দিন আসছে' এ দিন মানে ভালো দিন আসা নয়।এ দিন মানে দায়িত্তের ঘানি টা এখন তোমার কাঁধে তারপর আমার শান্তি।
বললাম 'বাবা, ১ বছর পড় তো মাত্র অনার্স শেষ করবো, মাস্টার্স?' সে নিয়ে আর কথা বাড়ালাম না, তারউপর সরকার শিক্ষার উপর ভ্যাট বসিয়েছে। মানে পড়ালেখা করতেও সরকার কে এখন সোজা বাংলায় টাকা দিতে হবে যেখানে বাহিরের দেশে সরকার উল্টো টা করে।
বাবা-মায়ের কাছে কখনো কিছু চাইনি।নিজের শখ-আহ্লাদ গুলো যে ছেলে এ দেশে জলে ভাসিয়ে দিতে পারে সে হয় সবচেয়ে সোনার ছেলে। আমিও তাই করেছি, কারন পড়ালেখা টাই তো কস্টে শেষ করছি,বাপের উপর বসে খাচ্ছি সেখানে আর নিজের শখ-আহ্লাদ।
কিন্তু কি হবে বলুন তো? নিজের যোগ্যতা দিয়ে এ দেশে নিজের পেট চলে না সেখানে দায়িত্ব-কর্তব্য এসব শব্দ গুলো কে খুব বেশী ভারী মনে হয়। খুব ভারী...
দেশ টা কে ছেড়ে অন্য কোথাও যেয়ে কামলা দিতে পারলেও হয়তো শান্তি পেতাম,তাতে অন্তত সৎ কামাই করে নিজের ভেতর একটা তৃপ্তি নিয়ে দায়িত্ব-কর্তব্য নামক ব্যাপার গুলোরও বেশ খেয়াল নিতে পারতাম। জী,পালাতে চাই,সে জন্য টাকা দরকার,নিজের জীবন কে রক্ষা করার জন্য এ দেশ থেকে চলে যেতে চাই,বলি তার জন্যও কি সরকার কে ট্যাক্স দিতে হবে?
পাপ হয়ে গেলো মশাই এ দেশে জন্ম নিয়ে বোধ করছি বড্ড পাপ করে ফেলেছি!

অলিখিত ডায়রির পাতা থেকে-২

তোমায় নিয়ে কোথাও কোনো একদিন হারিয়ে যেতে চাই,
সাগর পাড়ের ছোট্ট কুটিরে এক রাত থাকতে চাই।
সন্ধ্যে গড়িয়ে যখন রাত গড়াবে তোমার সাথে Candle Light Dinner করতে চাই।
Dinner শেষে দুজন wine এর বোতল নিয়ে সাগর পারে নেচে বেড়াতে চাই।
ওহ,আমি তো নাচতে জানিনা,Samba Move তুমি শিখিয়ে দিলে তোমার waist ধরে ১,২,৩, পিছনে,ডানে,সামনে Step ধরে নাচতে চাই। 
তারপর?
দুজন মিলে এক সিগারেট টানতে টানতে তারাদের গল্প শুনতে চাই। রাত পোহানোর আগে তোমায় নিয়ে প্রিয় কোনো মুভি দেখতে চাই। মুভি শেষে দুজন ঘুমিয়ে খুব বেলা করে উঠতে চাই,তারপর তোমায় নিয়ে বেরিয়ে যেতে চাই কোনো পাহাড়ি দেশে তেপান্তরে,হারাবার বেলায় সন্ধ্যে নেমে আসা, আষাঢ় কালে তোমায় নিয়ে ঐ দূর পাহাড়ের বুড়ি নানুর কুটিরে উঠতে চাই ।
বুড়ি নানু টা পাহাড়ি হলেও অনেক আধুনিক, সে গল্প আরেকদিন হবে। আজ না হয় সাগর পারেই রয়ে যাই,Samba,Wine আর নিকোটিন এর সাথে প্রিয় মুভি! চলোনা একদিন হারিয়ে যাই smile emoticon
-অলিখিত ডায়রির পাতা থেকে

জানি ভ্রমরা কেনো কথা কয় না

ভাবো তো, কোনো এক জোৎস্না রাতে তারা ভরা খোলা আকাশের নিচে কোন এক মেঠো পথ ঘেরা গ্রামের পারের মাঠে, যেথায় দূর থেকে ঘুমিয়ে পড়া মাটির ঘরটি দেখা যাচ্ছে সাথে পুকুর ঘাটে আলোর জাদুকরা এক স্বর্গপুরী হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তুমি আর আমি বসে আছি আর দুজন মিলে গাইছি,আসলে তুমি গাচ্ছো আমি সাথে সাথে সুর দিচ্ছি-
'জানি ভ্রমরা কেনো কথা কয় না
ওহ, জানি মহুয়া কেনো মাতাল হয় না
পদ্য ফোটা ঝিলি রোদে
শুধু ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি করে
তবু কেন আখি ঝরে শুধু ঝর ঝর ঝর ঝরে
আমি শুধু জানি এ মন কেন ঘরে রয় না,
জানি শুধু জানি...।।
কৃষ্ণ-চুড়া হাওয়ার সুরে শুধু ঝিরি ঝিরি ঝিরি ঝরে
সে এক পাখি শুনি ডাকে
শুধু চোখ গেলো চোখ গেলো বলে
আমি শুধু জানি এ জ্বালা কেন প্রানে সয় না।'
কি গাবে তো আমার সাথে?
না হয় ঘুম পারিয়েই দিলাম ভ্রমরার না বলা গানের সুরে সুরে... তুমি ঘুমিয়ে যাবে আমি চেয়ে রব। জোৎস্নার আলোয় এক অপরুপ আমার সপ্নপরী কে দেখবো আমার কোলে ঘুমিয়ে আছে! সে থেকে বড় শান্তি কি কিছু থাকতে পারে বলো তো?