শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৪

স্বপ্নপরীর কাছে লিখা খোলা চিঠি- ১

অনেক ভেবে ভেবে এ চিঠি টা লিখা শুরু করলাম, হয়তো পাগলামি হয়ে যাচ্ছে তবুও লিখছি। বাস্তবলোকে তুমি  নেই বলে কি তোমার সাথে আমি কথাও বলতে পারবো না ? এও কি হয় নাকি ?  কথা তো বলাই যায়...
আমার কাছে যে আমার কল্পনার স্বপ্ন জগৎ টা অনেক বেশী সত্যি ! তাইতো তুমি এতোটাই জীবন্ত আমার স্বত্বা জুড়ে।

তুমি হয়তো জানো,আমার নিজের ভেতর আমি আমার এক রাজ্য তৈরি করেছি, যেখানে কল্পনা ছাড়া আর কিছুই যায়গা করে নিতে পারেনা। সে রাজ্যে বাস করতে আমি খুবই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। সে রাজ্যের প্রতিটি মানুষ খুব চেনা জানা খুব আপন আপন ! সে রাজ্যে সব কিছুই কেমন যেনো খুব ভালো মানে সব কিছুই মনের মতো সব মানুষ গুলোও খুব বেশী ভালো এবং সুন্দর ।
সেখানে আমি যা চাই তাই হয়,এ জন্য সেটা আমার স্বপ্নরাজ্য আর সে রাজ্যের রাজা আমি বলে আমার নাম সপ্নবাজ !

কিন্তু এ রাজ্যে আপাততো একটাই অভাব জানো তো ?
তোমার অভাব সপ্নপরী !
আজ কাল কেমন জানি স্বপ্নরাজ্যেও অনেক ঝাপসা হয়ে যাচ্ছো তুমি......

আমি এখন আর আগের মতো সুন্দর করে গান গাইতে পারি না, গান লিখতেও কষ্ট হয়, এভাবে চলতে থাকলে আমি যে অতি শিগ্রই ধ্বংস হয়ে যাবো...
তুমি কোথায় সপ্নপরী ??

জানো স্বপ্নপরী,
তোমাকে নিয়ে রয়েছে অনেক কল্পনা। এগুলো সত্য হোক আর না হোক কিন্তু তোমাকে ঘিরে আমার এসব স্বপ্নের মাঝে রয়েছে অনেক ভালোলাগা। আর এই ভালোলাগা গুলো আমি সর্বদা একা অনুভব করি, কি করবো ? তুমি তো পাশে নেই... যে দিন দেখা দিবে সেদিন অবশ্যই ভাগ করে নিবো। ততোদিন না হয় আমার কাছে জমাই থাকলো ?
আচ্ছা, স্বপ্নপরী তুমি কি ট্রেন লাইন পছন্দ করো ? আমার ট্রেন লাইন এর পার ঘেসে কিংবা  আধো সন্ধ্যা ঘেরা বিকেলে ট্রেন  লাইন এর উপর দিয়ে হাটতে অনেক ভালো লাগে। যদিও একা একা হাটতে কেমন যেনো নিঃসঙ্গ লাগে কিন্তু আমার ভালো লাগে,কারন আমি যখন ট্রেন লাইন দিয়ে হাটি তখন ভাবি তুমি আমার সাথে হাটছো।
কেমন হবে বলতো ? কোনো এক বিকেলে আমি এবং তুমি একসাথে কোনো এক ট্রেন লাইন ঘিরে দুজনে হেটেই চলেছি তো চলছি ।
তুমি হাসছো আর আমি অবাক হয়ে তোমার ঐ আবেগময়ি সুন্দর হাসি দেখছি ।
স্বপ্নপরী, তুমি কি কখনো মধ্যরাতে ফাঁকা কোনো রাস্তায় রড লাইট এর নিচ দিয়ে একা হেটেছো ? অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে আমার মাঝে যখন আমি একা রাতের রাস্তায় এইভাবে হেঁটে চলি তখন ভাবি তুমি যদি আমার পাশে থাকতে তবে কেমন হতো ? তুমি আর আমি হেঁটে চলেছি আলো-ছায়া ঘেরা নীরীবিলি কোনো এক রাস্তা দিয়ে।

তুমি কি কখনো সন্ধ্যা ঘেরা কোনো বিকেলে যখন একসাথে ডুবন্ত সূর্যের আলো স্পষ্টত থাকে ঠিক সে সময় রিক্সা করে কোনো নীরব ঘেরা রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছ ?
আমি বেড়িয়েছি,সাথে তুমি ছাড়া আর কে থাকবে বলো ? রিক্সাতে আমার পাশে তুমি। আমার হাতটি সযতনে ধরে রেখেছ আর তাকিয়ে দেখছো আকাশের মাঝে হাড়িয়ে যাওয়া সূর্যের শেষ চিহ্নটি ।

কি স্বপ্নপরী, ভাবছো এ কোন পাগলের পাল্লায় পড়লে তুমি ? ভাবতে পারো, তবে এ তো মাত্র শুরু ! এখনো তো অনেক কিছুই বাকি...
এ তো গেলো শুধু তোমাকে ঘিরে আমার নিঃসঙ্গ কিছু ঘুরে বেড়ানোর মুহূর্ত যা সর্বদা আমার কল্পলোকে ভেসে বেড়ায় !!

তুমি জানো তবুও বলছি, আমি সর্বদা একা একটি ছেলে। স্বপ্নপরীর যে জায়গা টি আমি তোমাকে দিয়েছি তা আমার কাছে আমার নিজের চাইতেও অনেক বেশী দামী। জিজ্ঞেস করতে পারো, কেনো ?
কারন, আমি আমার স্বপ্নপরী অর্থে যে মানুষটি কে কল্পনা করি সে আমাকে আমার থেকেও বেশী ভালোবাসে... বোঝে...আপন ভাবে... !! যাকে বলে অনেকটা পুরানো দিনের ধ্যান-ধারনার মতো দুটি মানুষ একটি স্বত্বা !  
আর কথা বারাবো না, অনেক বেশী অসহায় লাগছে... তুমি হয়তো জানো দিনের দিন আমি কতোটা পাল্টে যাচ্ছি ?  এখন আর আমি সেই আগের মিডি নেই।
এখন আর আমার আগের মতো ভালবাসতে ইচ্ছে করেনা ! না ইচ্ছে করে সবাইকে আপন ভাবতে। আমি অনেক পাল্টে গিয়েছি পরী !
এখন আর কল্পনা, স্বপ্ন এগুলো ভালো লাগে না...মনে হয় এগুলো শুধু একেকটা শব্দ ছাড়া কিছু না ! আমি কোনো এক ব্যাস্ত শহড়ের ভিড়ের মাঝে আটকে গিয়েছি। থেমে গিয়েছে আমার স্বত্বা। হাজার চাইলেও কেনো যেনো আমি আর আমার ভেতরকার হারিয়ে যাওয়া ভিড়ের মাঝেকার সেই মিডি কে খুঁজে পাই না ! অনেক ভিরেও এখন আমি একা খুবই একা...
মাঝে মাঝে মনে হয়, মৃত্যুর পর হয়তো তোমার দেখা পাবো। হয়তো বা কোনো নরকে বা স্বর্গে !  তবে নিজের কোনো জগতে......

জানো আজ আকাশে অনেক সুন্দর একটি চাঁদ উঠেছে, সম্ভবত আজ জ্যোৎস্না ! আমি সে জ্যোৎস্না আমার হৃদয় গহীন থেকে অনুভব করছি... আষাঢ়ের এই জ্যোৎস্না দেখার মাঝে আমার বিশেষ ভালো লাগা কাজ করে আর তা হচ্ছে আকাশের ধোঁয়ার মতো ভেসে ভেসে যাওয়া সাদা মেঘগুলো !! অনেক ভালো লাগে আমার রাত জেগে আকাশ দেখতে আর এমন রাত তো ভালবাসারো উদ্ধে ! কারন কল্পনায় যেথায় তুমি পাশে আছো সেখানে কষ্ট তো আমাকে ছোঁয়ারও সাহস পাবেনা।
 এমন কোনো এক জ্যোৎস্নাময় আষাঢ়ের  রাতে তুমি আর আমি বারান্দায় বসে আছি, চারপাশে মোমের আলো আর প্রদীপ গুলো টীপ টীপ করে জ্বলছে !
তোমার পরনে লাল শাড়ি আর কপালে লাল টিপ, বাতাসে খোলা চুল গুলো একদমি ছন্নছারা হয়ে উড়ছে... যেনো মানতেই চাচ্ছে না, আর আমি সেগুলো একটু পর পর ঠিক করে দিচ্ছি । তুমি আমার পাশে বসে আছো আমার হাতটি ধরে এতোটাই শক্ত করে যেনো ছেড়ে দিলে আমি পালিয়ে যাবো ! বার বার বলছো ‘ আহা... খোলা চুল না তোমার ভালো লাগে তাহলে আবার আমার চুল গুলো বার বার ঠিক করতে হবে কেন তোমার STUPID !!
আমি হেসে বলছি ... এ জন্যই তো ভালোবাসি...
অনুভুতির রাজ্যে আরো কাছে আসার আকুল আবদারে, হঠাৎ তুমি গেয়ে উঠলে...

“আমারো পড়ানো যাহা চায়...
তুমি তাই গো...
আমারো পড়ানো যাহা চায়...। ”

-অবয়ব সিদ্দিকী মিডিয়া 

  
ছবিঃ সংগৃহীত 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন